কুয়াশা ও শীতে বিপর্যস্ত খুলনার কয়রার উপকূলীয় জনজীবন

খুলনা জেলার উপকূলবর্তী সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলা তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে প্রায় দুই লাখের বেশি মানুষের বসবাস, যাঁদের অধিকাংশই শ্রমজীবী। এই প্রতিকূল আবহাওয়া তাঁদের দৈনন্দিন জীবনে নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।

কুয়াশা ও শীতে বিপর্যস্ত খুলনার কয়রার উপকূলীয় জনজীবন

কুয়াশা ও শীতে বিপর্যস্ত খুলনার কয়রার উপকূলীয় জনজীবন

খুলনা জেলার উপকূলবর্তী সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলা তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে প্রায় দুই লাখের বেশি মানুষের বসবাস, যাঁদের অধিকাংশই শ্রমজীবী। এই প্রতিকূল আবহাওয়া তাঁদের দৈনন্দিন জীবনে নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।

শ্রমজীবীদের দুর্ভোগ

ঘন কুয়াশায় সকালবেলায় রাস্তাঘাট প্রায় অদৃশ্য। কয়রার ভ্যানচালক রবিউল ইসলাম বলেন,
"পেটের তাগিদে কাজ করতে হচ্ছে, কিন্তু এমন ঠান্ডায় কাজ করা খুব কষ্টকর।"

দিনমজুর নজরুল শেখ জানান, ধান কাটার সময় তীব্র ঠান্ডায় হাত-পা জমে যায়। উপরন্তু, মালিকরা মজুরি কমিয়ে দিয়েছে, ফলে কঠোর পরিশ্রম করেও সঠিক মূল্য পাচ্ছেন না।

জেলেদের অবস্থা

কয়রা গ্রামের জেলে আবুল হোসেন জানান, ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডার কারণে সুন্দরবনে মাছ ধরতে যেতে পারছেন না। তিনি বলেন,
"মাছ ধরার অভাবে সংসারে অভাব-অনটন দেখা দিয়েছে।"

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রভাব

কয়রা মোংলাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শওকত হোসেন জানান,
"শীতের কারণে শিক্ষার্থীদের স্কুলে উপস্থিতি অনেক কমে গেছে। ঠান্ডাজনিত অসুখে আক্রান্ত হয়ে অনেকেই স্কুলে আসতে পারছে না।"

স্বাস্থ্যঝুঁকি

কয়রা বেদকাশির উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক আকবর হোসেন জানান,
"জ্বর, সর্দি-কাশি ও আমাশয়ের মতো ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।"

উপকূলীয় এলাকার অবস্থা

২ জানুয়ারি থেকে কয়রা উপকূলীয় এলাকায় শীত ও কুয়াশার তীব্রতা বেড়ে গেছে। এতে সাধারণ মানুষের জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষত, দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষেরা এই শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

এলাকাবাসীর দাবি

  • জরুরি ত্রাণ ও শীতবস্ত্র: দরিদ্র মানুষের জন্য দ্রুত ত্রাণ ও স্বল্পমূল্যে শীতবস্ত্র সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
  • চিকিৎসা সুবিধা: পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরবরাহ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
  • কর্মসংস্থানের সুযোগ: স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির দাবি জানানো হয়েছে।

উপসংহার

কয়রা উপজেলায় শীত ও কুয়াশার প্রকোপে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা থমকে গেছে। স্থানীয় প্রশাসন ও মানবিক সংস্থাগুলোর উচিত দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া, যাতে এই শীতের দুর্ভোগ কাটিয়ে এলাকাবাসী স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে।

শেখ জাহাঙ্গীর করিম টুলু