খুলনার কয়রায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ জরুরি: স্থানীয় প্রশাসনের গোলটেবিল আলোচনা
খুলনার কয়রা উপজেলায় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভ্যন্তরীণ অভিবাসন ও মাইগ্রেশনের প্রভাব নিয়ে এক গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৮ নভেম্বর) উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে কারিতাস খুলনা অঞ্চলের ডিআরআর অ্যান্ড সিসিএ প্রকল্প এই সভার আয়োজন করে। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলি বিশ্বাস। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ড. মোঃ ইসমাইল হোসেন।
খুলনার কয়রায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ জরুরি: স্থানীয় প্রশাসনের গোলটেবিল আলোচনা
খুলনার কয়রা উপজেলায় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভ্যন্তরীণ অভিবাসন ও মাইগ্রেশনের প্রভাব নিয়ে এক গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৮ নভেম্বর) উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে কারিতাস খুলনা অঞ্চলের ডিআরআর অ্যান্ড সিসিএ প্রকল্প এই সভার আয়োজন করে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলি বিশ্বাস। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ড. মোঃ ইসমাইল হোসেন।
আলোচনার মূল বিষয়বস্তু
সভায় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কয়রার উপকূলীয় অঞ্চলে বাড়তে থাকা দুর্যোগের প্রভাব নিয়ে আলোচনা হয়। নদ-নদীতে পলি জমা এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী উপচে বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। এর ফলে বেড়িবাঁধ বারবার ভেঙে যাচ্ছে, এবং বহু মানুষ সহায়-সম্বলহীন হয়ে অভ্যন্তরীণ অভিবাসনের শিকার হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলি বিশ্বাস বলেন,
"জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কয়রায় দুর্যোগের মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। অভ্যন্তরীণ অভিবাসন কমাতে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা এবং টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি।"
পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণ ও সমাধান
প্রধান বক্তা ড. মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন,
"জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী মানব সমাজ। বনভূমি উজাড়, কলকারখানা, ও যানবাহনের বৃদ্ধিতে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং অন্যান্য দূষণকারী গ্যাসের পরিমাণ বেড়েছে। পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণ ও বনায়ন বাড়াতে হবে।"
তিনি আরও উল্লেখ করেন,
- সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়ানো।
- খাদ্য ও পানির অপচয় রোধ।
- বিদ্যুৎ সাশ্রয়।
- পলিথিন ও প্লাস্টিক সামগ্রী কম ব্যবহার।
- জমিতে জৈব সার প্রয়োগ।
- কার্বন ও মিথেন গ্যাস নির্গমন নিয়ন্ত্রণ।
প্রস্তাবিত পরিকল্পনা
গোলটেবিল আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা কয়রার সমস্যাগুলো সমাধানে কয়েকটি মূল প্রস্তাব তুলে ধরেন:
- টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ: উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের সুরক্ষার জন্য পরিকল্পিতভাবে শক্তিশালী বাঁধ নির্মাণ।
- বৃক্ষরোপণ ও বনায়ন বৃদ্ধি: পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য।
- দুর্যোগ প্রতিরোধী পরিকল্পনা: দুর্যোগের ঝুঁকি কমাতে বৈজ্ঞানিক উপায়।
- সৌরশক্তি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার।
- উন্নত কৃষি ও টেকসই উন্নয়ন।
সবার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের আহ্বান
এই আলোচনায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি এবং সুশীল সমাজের সদস্যরা অংশ নেন। বক্তারা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর জোর দেন।
পরিশেষে, কয়রায় অভ্যন্তরীণ অভিবাসন রোধ এবং পরিবেশ সুরক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, ও সাধারণ জনগণের সমন্বয়ে একটি টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।