হারিয়ে যেতে বসেছে সাতক্ষীরার ঐতিহ্যবাহী খেজুরের রস আহরণ

সাতক্ষীরার ঐতিহ্যবাহী খেজুরের রস আহরণের দৃশ্য এখন প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। এক সময় শীত এলেই সাতক্ষীরার ঘরে ঘরে খেজুরের রস বা গুড় দিয়ে তৈরি হতো পিঠা ও পায়েস। কিন্তু কালের পরিবর্তনে কমে গেছে খেজুর গাছ এবং রস সংগ্রহের প্রথা।

হারিয়ে যেতে বসেছে সাতক্ষীরার ঐতিহ্যবাহী খেজুরের রস আহরণ

হারিয়ে যেতে বসেছে সাতক্ষীরার ঐতিহ্যবাহী খেজুরের রস আহরণ

সাতক্ষীরার ঐতিহ্যবাহী খেজুরের রস আহরণের দৃশ্য এখন প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। এক সময় শীত এলেই সাতক্ষীরার ঘরে ঘরে খেজুরের রস বা গুড় দিয়ে তৈরি হতো পিঠা ও পায়েস। কিন্তু কালের পরিবর্তনে কমে গেছে খেজুর গাছ এবং রস সংগ্রহের প্রথা।

ঐতিহ্যের বিলুপ্তি

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে জানা যায়, এক সময় রাস্তার দুই পাশে ও ফসলি জমির সীমানায় খেজুর গাছের সারি দেখা যেত। শীতের শুরুতে গাছিরা মাটির হাঁড়ি ঝুলিয়ে রস সংগ্রহ করতেন। সেই রস দিয়ে পিঠা, পায়েস তৈরি হতো, যা গ্রামীণ মানুষের জন্য শীতকালীন বিশেষ আনন্দের অংশ ছিল।

কিন্তু এখন ফসলি জমিতে নতুন ঘরবাড়ি তৈরি হওয়ায় অনেক খেজুর গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এর ফলে রস সংগ্রহের ঐতিহ্য বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

গাছিদের অভিজ্ঞতা

সাতক্ষীরার এক অভিজ্ঞ গাছি, মো. আব্দুস ছবুর জানান, তিনি ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছেন। তার মতে, খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় এবং নতুন প্রজন্মের আগ্রহের অভাবে এই পেশা ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে প্রতি ভাড় (প্রায় ৫ লিটার) খেজুরের রস ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগে তুলনামূলক সস্তা ছিল।

চাহিদা ও চ্যালেঞ্জ

খেজুরের রস ও গুড়ের চাহিদা বেড়েই চলেছে, কিন্তু গাছের অভাব ও উৎপাদন কমে যাওয়ায় স্থানীয় বাজারে এর সরবরাহ সীমিত। এর পাশাপাশি, নতুন প্রজন্ম এই ঐতিহ্যবাহী কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে, যা রস আহরণের শিল্পকে আরও সংকটে ফেলেছে।

স্থানীয়দের প্রত্যাশা

সাতক্ষীরার স্থানীয়রা আশা করছেন, খেজুর গাছ রোপণ এবং গাছিদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হলে আবারও খেজুরের রস আহরণের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। এ বিষয়ে সরকারি উদ্যোগ নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন তারা।

শহর প্রতিনিধি: শিব বিশ্বাস, সাতক্ষীরা