সাতক্ষীরায় শীতে গ্রামে গ্রামে মহিলাদের কুমড়াবড়ির উৎসব
শীতকাল এলেই সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন গ্রামের মহিলাদের মধ্যে শুরু হয় কুমড়াবড়ি তৈরির এক চিরায়ত উৎসব। কুমড়াবড়ি শুধু গ্রামীণ ঐতিহ্য নয়, বরং এটি তরকারিতে নতুন স্বাদ আনতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
সাতক্ষীরায় শীতে গ্রামে গ্রামে মহিলাদের কুমড়াবড়ির উৎসব
শীতকাল এলেই সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন গ্রামের মহিলাদের মধ্যে শুরু হয় কুমড়াবড়ি তৈরির এক চিরায়ত উৎসব। কুমড়াবড়ি শুধু গ্রামীণ ঐতিহ্য নয়, বরং এটি তরকারিতে নতুন স্বাদ আনতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
কুমড়াবড়ির ঐতিহ্য
শীতের শুরুতেই গ্রামাঞ্চলে পাকা কুমড়ার প্রচুর ফলন হয়। কুমড়ার সঙ্গে কলাইয়ের ডাল মিশিয়ে ছোট বড়ি আকারে গড়ে রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হয় কুমড়াবড়ি। এ বড়ি সারা বছর সংরক্ষণ করে তরকারিতে ব্যবহার করা হয়। দেবহাটার গৃহিণীদের জন্য এটি যেন শীতকালীন একটি উৎসব।
একাধিক গৃহিণী জানান, কুমড়াবড়ি তৈরির এই প্রক্রিয়া আবহমান গ্রামীণ ঐতিহ্যের অংশ।
কুমড়াবড়ি তৈরির প্রক্রিয়া
-
কুমড়া সংগ্রহ:
বর্ষার সময়ে লাগানো কুমড়া গাছের ফলন শীতের শুরুতে পাওয়া যায়। পাকা কুমড়াগুলো ধীরে ধীরে ছাদ বা মাচায় ঝুলে থাকে। -
ডাল প্রস্তুত:
কলাইয়ের ডাল পানিতে ভিজিয়ে ছাল ছাড়িয়ে রসালো করে নেওয়া হয়। -
মিশ্রণ ও পিষা:
কুমড়া ও ডাল একসঙ্গে মিশিয়ে মণ্ড তৈরি করা হয়। বর্তমানে ঢেঁকির বদলে মেশিনে এটি পিষা হয়। -
রোদে শুকানো:
টিন, নেট, বা পরিষ্কার কাপড়ে ছোট বড়ি আকারে গড়ে রোদে শুকানো হয়।
গৃহিণীদের অভিজ্ঞতা
দেবহাটার সখিপুর গ্রামের মারুফা খাতুন বলেন:
"কুমড়াবড়ি তৈরি আমাদের জন্য শীতের রুটিন কাজের মতো। এটি ঘরোয়া কাজে একধরনের উৎসবের আমেজ নিয়ে আসে।"
সখিপুর গ্রামের ওজিলা বেগম বলেন, এ বছর তিনি ১৭০-১৮০ টাকা দরে কলাইয়ের ডাল এবং ৩০ টাকা প্রতি কেজি দরে কুমড়া কিনেছেন।
গ্রাম্য সমাজে কুমড়াবড়ি নিয়ে নানা কুসংস্কারও প্রচলিত। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন, বড়ি দিলে কুয়াশায় সূর্যের দেখা মেলে না। তবে এ কথার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই।
বাজারে ডালের চাহিদা
সখিপুর বাজারের মুদি দোকানদার এলাই বক্স জানান, শীত মৌসুমে কলাইয়ের ডালের চাহিদা অনেক বেশি। এ বছর ডালের দাম প্রতি কেজি ১৭০-১৮০ টাকা।
তিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম আলম, সাতক্ষীরা