জগন্নাথপুরে কুশিয়ারা নদীতে চলছে অবৈধভাবে বালুমাটি উত্তোলনের উৎসব
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কুশিয়ারা নদীতে অবৈধভাবে বালু-মাটি উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। এতে বাড়িঘর ও ফসলি জমি রক্ষায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে কুশিয়ারা নদী পাড়ের লোকজন। ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
জগন্নাথপুরে কুশিয়ারা নদীতে চলছে অবৈধভাবে বালুমাটি উত্তোলনের উৎসব
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কুশিয়ারা নদীতে অবৈধভাবে বালু-মাটি উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। এতে বাড়িঘর ও ফসলি জমি রক্ষায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে কুশিয়ারা নদী পাড়ের লোকজন। ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে মা এন্টারপ্রাইজ নামক একটি প্রতিষ্ঠান উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের খানপুর মৌজার কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলনের অনুমোদন পায়। বালু উত্তোলনের অনুমতির সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে পরে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ও কর্তৃপক্ষকে ভুল তথ্য দিয়ে আরো ২৮ দিন সময় বৃদ্ধি করে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মা এন্টারপ্রাইজ বালু উত্তোলনের জন্য একটি স্থানের অনুমতি পেলেও একাধিক স্থান থেকে বালু উত্তোলন করছে। তাদের বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত ড্রেজিং মেশিন জালালপুর, বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডের অদূরে কসবা এলাকায় কুশিয়ারা নদীতে বসানো রয়েছে। উক্ত ড্রেজিং মেশিনের কারণে নৌ চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। এছাড়াও কসবা এলাকায় কুশিয়ারা নদীর তীরের সন্নিকট থেকে বালু উত্তোলনের কারণে উক্ত স্থানের বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমিতে ভাঙন সৃষ্টি হচ্ছে। এই স্থানের ফসলি জমি মারাত্মক হুমকির মুখে। ভবিষ্যতে ফসলি জমি নদীতে বিলীন হবে এমনটা আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
এদিকে, কুশিয়ারা নদীর পূর্বপাড় রসুলপুর মৌজায় বসানো দুটি ড্রেজিং মেশিন দেখা যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক লোক জানান, ওই দুটি ড্রেজিং মেশিনের অন্তরালে মা এন্টারপ্রাইজ। তারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। কিন্তু জানতে চাইলে কর্মরত লোকেরা জানায়, এই প্রজেক্টের মালিক সিলেটের শিপু চৌধুরী।
শিপু চৌধুরীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বালু উত্তোলনের কোনো ধরনের অনুমোদন না থাকলেও অনুমোদনের সবধরনের প্রস্তুতি চলছে।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একাধিক লোক জানান, কুশিয়ারা নদীতে বালু উত্তোলনের মা এন্টারপ্রাইজের অন্তরালে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জড়িত। ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর ওই আওয়ামীলীগ নেতারা আড়ালে থেকে তাদের নিজস্ব লোক দিয়ে অবৈধভাবেঅনুপ্রবেশকারীদের বালু উত্তোলনে মা এন্টারপ্রাইজকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। এ পযন্ত অনুমোদিত বালু থেকে প্রায় তিন গুণ বেশি বালু উত্তোলন করেছে মা এন্টারপ্রাইজ। এতে সরকার বঞ্চিত হয়েছে প্রকৃত রাজস্ব থেকে।
মা এন্টারপ্রাইজের পরিচালক মতিউর রহমান এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, ৫ আগস্টের পর দেশের অবস্থা ভালো না থাকায় আমরা ২৫ লক্ষ ঘনফুট বালু উত্তোলন করতে পারিনি। তাই কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আরো ২৮ দিনের সময়সীমা নেই। এছাড়া কুশিয়ারা নদীতে অন্যান্য ড্রেজার তার নয় তা-ও জানান।
জগন্নাথপুর সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিয়াদ বিন ইব্রাহিম ভুঞা সা-আধ বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বালু উত্তোলনে মা এন্টারপ্রাইজ খানপুর মৌজায় অনুমতি পায়। এর বাইরে কোথাও অনুমতি নেই তাদের। এছাড়া নদী থেকে বালু উত্তোলনের জন্য আমরা নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছি। কিন্তু আমাদের নির্ধারিত স্থানের বাইরে অন্য কোনো স্থান থেকে বালু উত্তোলন হলে জরিমানাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোঃ মুকিম উদ্দিন জগন্নাথপুর প্রতিনিধি