রান্না ঘরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুনে পুড়ে দরিদ্র ৬ পরিবার নিঃশ্ব

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে রান্নাঘরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

রান্না ঘরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুনে পুড়ে দরিদ্র ৬ পরিবার নিঃশ্ব

রান্না ঘরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুনে পুড়ে দরিদ্র ৬ পরিবার নিঃশ্ব

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে রান্নাঘরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায়  ৪টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
এদিকে, ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্ব অবহেলার কারণে এ ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করছেন স্থানীয়রা।গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর)  সন্ধ্যারাতে উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের চিলাউড়া গোলাপাড়া পুঞ্জি গ্রামে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
আগুন নেভাতে গিয়ে সাইফুল নামের এক যুবক আ*হত হয়েছে। তাকে উপজেলা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, পুঞ্জি গ্রামের আঙ্গুর মিয়ার বসত বাড়ির রান্নাঘরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। তাৎক্ষনিক আগুনের লেলিহান শিখা পার্শ্ববর্তী আরশ আলী, বাছিদ মিয়া ও রামিম মিয়াসহ ৬টি ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পরে দুই ঘন্টাব্যাপি গ্রামের লোকজন প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে ওই ৬টি ঘরে থাকা নগদ অর্থসহ সকল আসবাপত্র পুড়ে যায়। এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকা।
 ক্ষতিগ্রস্ত আরশ আলী বলেন, ঘরে নগদ তিন লাখ টাকা ছিল। কিছুই বের করতে পারিনি। সবাই শুধু নিজের প্রাণ নিয়ে বের হয়েছিলাম। সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
আরেক ক্ষতিগ্রস্ত বাছিদ মিয়া বলেন, প্রায় ১০০ মণ ধান ছিল। সব পুড়ে গেছে।
 স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘটনার সাথে সাথে জগন্নাথপুর ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হলে; তাঁদের গাড়িও আসেনি কর্মীরাও আসেনি। তবে ফায়ার সার্ভিসের দাবি হঠাৎ করে গাড়ি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তাঁরা ঘটনাস্থলে যেতে পারেন নি।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য লিলু মিয়া বলেন, ৬ টি ঘরের কোন কিছুই বাকি নেই। সব পুড়ে গেছে। কারো ঘরে অনেক টাকা পয়সা, সোনাদানাও ছিল। কেউই কিছু বের করতে পারেনি। আগুনে ৪টি গবাদিপশুর অবস্থাও খুব খারাপ হয়ে গেছে।
স্থানীয় যুবক জুবায়ের আহমদ  বলেন, ঘটনার সাথে সাথে ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা আসেনি। যদি ফায়ার সার্ভিস আসত, তাহলে এতো ক্ষতি হতো না।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, আগুনে নি:স্ব করে দিয়েছে দরিদ্র ছয় কৃষক পরিবারকে। ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত সহায়তা আমরা লিখিলভাবে রিপোর্ট করেছি। অসহায় পরিবারের লোকজনকে সহায়তায় সমাজের বিত্তশালীদেক এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
জগন্নাথপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ইনচার্জ মুর্শেদ আলম মুঠোফোনে বলেন, খবর পাওয়ার সাথে সাথে আমারা ঘটনাস্থলে যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠার পর হঠাৎ করে গাড়িটি নষ্ট হয়ে যায়। পরে পার্শ্ববর্তী উপজেলা শান্তিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আনানো হয়। কিন্তু ততক্ষণে গ্রামবাসীরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেন।
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরকত উল্লাহ ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
 এদিকে, দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে জগন্নাথপুর ফায়ার সার্ভিসের বিরুদ্ধে  শুক্রবার বিকেলে চিলাউড়া গ্রামবাসীর আয়োজনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

মোঃ মুকিম উদ্দিন জগন্নাথপুর প্রতিনিধি