লিবিয়ায় দালালের নির্যাতনে নিহত রাসেল! ক্ষোভে দালালের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ইতালি নেওয়ার প্রলোভনে প্রতারিত হয়ে লিবিয়ায় মাফিয়া চক্রের হাতে নিহত হয়েছেন রাসেল মিয়া (২৫)। নিহত রাসেল উপজেলার ধরমণ্ডল ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা লাউছ মিয়ার ছেলে।

লিবিয়ায় দালালের নির্যাতনে নিহত রাসেল! ক্ষোভে দালালের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ইতালি নেওয়ার প্রলোভনে প্রতারিত হয়ে লিবিয়ায় মাফিয়া চক্রের হাতে নিহত হয়েছেন রাসেল মিয়া (২৫)। নিহত রাসেল উপজেলার ধরমণ্ডল ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা লাউছ মিয়ার ছেলে।
নির্যাতনের শিকার হয়ে করুণ মৃত্যু
পরিবারের দাবি, ২১ ফেব্রুয়ারি লিবিয়ার এক মাফিয়া চক্র রাসেলকে বিষাক্ত ইনজেকশন প্রয়োগ করে হত্যা করে। ২২ ফেব্রুয়ারি এক প্রবাসীর মাধ্যমে তার মৃত্যুর খবর জানতে পারে পরিবার।
জানা যায়, ২০২৪ সালে পরিবারের আর্থিক দুরবস্থা কাটাতে পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে দালাল লিলু মিয়ার মাধ্যমে লিবিয়ায় পাড়ি জমায় রাসেল। প্রতিশ্রুতি ছিল, সেখান থেকে তাকে ইতালি পৌঁছে দেওয়া হবে। কিন্তু বিদেশের মাটিতে তার জন্য অপেক্ষা করছিল ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন।
মানব পাচারের ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত পরিবার
লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর রাসেলকে ১০ লাখ টাকায় এক স্থানীয় দালাল চক্রের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন। মাফিয়া চক্র একাধিকবার নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে পরিবারের কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা আদায় করে। সবশেষ আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করে তারা। টাকা দিতে না পারায় রাসেলকে হত্যা করা হয় বলে দাবি পরিবারের।
নিহতের পিতা লাউছ মিয়া বলেন,
"আমার জীবনের শেষ সম্বল বসতভিটা ও ফসলি জমি বিক্রি করে কয়েক দফায় ৫০ লাখ টাকা দিয়েছি। আরও টাকা চাইলে দিতাম, কিন্তু টাকা দিতে না পারায় আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে।"
দালালের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট
রাসেলের মৃত্যুর খবরে ক্ষুব্ধ জনতা দালাল লিলু মিয়ার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।
স্থানীয়দের দাবি, দূরবর্তী ৭নং ওয়ার্ডের কিছু মানুষ এসে প্রকাশ্যে লিলু মিয়ার বাড়ি ভেঙে ফেলে এবং লুটপাট চালায়। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২ কোটি টাকারও বেশি।
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খাইরুল আলম বলেন,
"নিহতের পরিবারের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীনা নাসরিন বলেন,
"এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। মানব পাচারের সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।"
নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি