শ্যামনগরে জীবিকার সন্ধানে নারীদের জীবন সংগ্রাম

সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকা শ্যামনগরের হাজারো নারী প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সুন্দরবনের নদ-নদীতে চিংড়ি রেণু আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। প্রতিকূল পরিবেশ, বাঘ ও কুমিরের ভয়, এবং লবণ পানির দীর্ঘক্ষণ সংস্পর্শে থেকে শরীরের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কার মধ্যেও তারা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। উপকূলের নারীরা প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নদীতে জাল টেনে চিংড়ি রেণু সংগ্রহ করেন। গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালীনি, মুন্সিগঞ্জ এবং রমজাননগর ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার নারী এই কাজে যুক্ত। তারা দৈনিক দেড়শ থেকে দুইশ টাকার চিংড়ি রেণু সংগ্রহ করেন, যা তাদের পরিবারের জন্য সহায়ক হলেও যথেষ্ট নয়।

শ্যামনগরে জীবিকার সন্ধানে নারীদের জীবন সংগ্রাম

শ্যামনগরে জীবিকার সন্ধানে নারীদের জীবন সংগ্রাম

সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকা শ্যামনগরের হাজারো নারী প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সুন্দরবনের নদ-নদীতে চিংড়ি রেণু আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। প্রতিকূল পরিবেশ, বাঘ ও কুমিরের ভয়, এবং লবণ পানির দীর্ঘক্ষণ সংস্পর্শে থেকে শরীরের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কার মধ্যেও তারা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

উপকূলের নারীরা প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নদীতে জাল টেনে চিংড়ি রেণু সংগ্রহ করেন। গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালীনি, মুন্সিগঞ্জ এবং রমজাননগর ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার নারী এই কাজে যুক্ত। তারা দৈনিক দেড়শ থেকে দুইশ টাকার চিংড়ি রেণু সংগ্রহ করেন, যা তাদের পরিবারের জন্য সহায়ক হলেও যথেষ্ট নয়।

স্বাস্থ্যঝুঁকি ও কর্মসংস্থানের অভাব

শ্যামনগর সদর হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. ইভা জানান, দীর্ঘ সময় লবণ পানিতে থাকার ফলে নারীদের জরায়ুতে ইনফেকশন, অনিয়মিত মাসিক, বা অন্যান্য চর্মরোগ দেখা দিতে পারে। এছাড়া নোনা পানির কারণে পানিবাহিত রোগের ঝুঁকিও থাকে। অনেক নারী চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে এলেও তাদের কাজের ধরন পরিবর্তনের কোনো বিকল্প নেই বলে তারা জানান।

পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ

চিংড়ি চাষের বিস্তারের কারণে এই এলাকায় কৃষিকাজ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে পুরুষরা দিন দিন বেকার হয়ে পড়ছেন এবং নারীরা বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এই কাজ বেছে নিচ্ছেন। স্থানীয় গৃহবধূ তাসলিমা খাতুন ও হাফিজা বেগম জানান, বাঘ বা কুমিরের আক্রমণের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও তারা প্রতিদিন নদীতে কাজ করে যাচ্ছেন।

স্থানীয় প্রশাসনের বক্তব্য

গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিএম মাকসুদুল আলম জানান, গাবুরা ইউনিয়নের প্রায় চার হাজার হতদরিদ্র নারী খোলপেটুয়া, কপোতাক্ষ এবং কালিঞ্চি নদীতে চিংড়ি ও পারশে মাছের রেণু সংগ্রহ করেন। অনেকে কর্মক্ষেত্রে বাঘ ও কুমিরের আক্রমণের শিকার হন।

সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ

জীবনের ঝুঁকি এড়াতে উপকূলীয় নারীদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। স্থানীয় প্রশাসন ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর যৌথ উদ্যোগে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

আল-হুদা মালী, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি