ছাত্র আন্দোলন দমাতে ১০ কোটি টাকা অনুদান ও অস্ত্র যোগান দেয় ফজলে করিম
চট্টগ্রামের ছাত্র-জনতার ওপর দফায় দফায় সহিংসতায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও অর্থ যোগানের পেছনে রাউজানের সাবেক এমপি ফজলে করিম চৌধুরী ও তার ছেলে ফরাজ করিম চৌধুরীর নাম উঠে এসেছে।
ছাত্র আন্দোলন দমাতে ১০ কোটি টাকা অনুদান ও অস্ত্র যোগান দেয় ফজলে করিম
চট্টগ্রামের ছাত্র-জনতার ওপর দফায় দফায় সহিংসতায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও অর্থ যোগানের পেছনে রাউজানের সাবেক এমপি ফজলে করিম চৌধুরী ও তার ছেলে ফরাজ করিম চৌধুরীর নাম উঠে এসেছে।
বিক্ষোভ দমনে পরিকল্পিত অস্ত্র ব্যবহার
২০২৫ সালের ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় মুরাদপুর, বহদ্দারহাটসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে এসব অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। এতে পাঁচজন নিহত ও দুই শতাধিক মানুষ আহত হন।
সিএমপি সূত্রে জানা যায়, ছাত্র আন্দোলনে ব্যবহৃত অস্ত্রের বেশিরভাগই ছিল বৈধ অস্ত্র। এসব অস্ত্র সংগ্রহে নগরের রাউজান ও নন্দনকানন থেকে সমন্বয় করা হয়। এছাড়া ফেনী থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র সরবরাহ করা হয় ৪ আগস্ট।
অস্ত্র ও অর্থ যোগান
সূত্র মতে, আন্দোলন দমনে ব্যবহৃত অস্ত্রের যোগানদাতা ছিলেন ফজলে করিম চৌধুরী এবং তার ছেলে ফরাজ করিম চৌধুরী। অস্ত্র সংরক্ষণে চট্টগ্রাম স্টেশন রোডের মোটেল সৈকত এবং খুলশীর পুলিশের একটি গেস্ট হাউস ব্যবহার করা হয়। এ কাজে আর্থিক সহায়তা দেন যুবলীগ নেতা নিয়াজ মোর্শেদ এলিট, সাবেক কাউন্সিলর আব্দুর সবুর লিটন, ও ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম।
অস্ত্রধারীদের গোপন আস্তানা
অভিযুক্ত যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতাদের বড় একটি অংশ বর্তমানে ভারতে, বার্মা, ও নেপালে অবস্থান করছে। এদের মধ্যে যুবলীগ নেতা নুরুল আজিম রনি ও হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর ভারতে এবং আরশেদুল আলম বাচ্চু যুক্তরাজ্যে পালিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।
জরুরি অভিযান ও অস্ত্র উদ্ধারের আহ্বান
চট্টগ্রাম নগরের ৮ থানা থেকে লুট হওয়া ৪৬৫টি অস্ত্র এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা না পড়া ১২৪টি বৈধ অস্ত্রসহ প্রায় ৬২৪টি আগ্নেয়াস্ত্র এখনও উদ্ধার হয়নি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেন, “অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং দোষীদের গ্রেফতার না করা হলে জননিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।”
সরকারের ভূমিকা ও সমাধান প্রস্তাব
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেয়া হলেও সিএমপি এখনও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখাতে পারেনি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অবিলম্বে সক্রিয় অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি