কয়রায় তাঁতী লীগের নেতা কোহিনুর আলম গ্রেফতার, এলাকায় স্বস্তি

খুলনার কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের তাঁতী লীগের সভাপতি মো. কোহিনুর আলম (৪৫) পুলিশের হাতে অবশেষে গ্রেফতার হয়েছেন। সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে কয়রা থানার এসআই রাজেতের নেতৃত্বে একটি চৌকস দল কৌশলে তাকে উত্তর বেদকাশী কাছারিবাড়ি বাজার থেকে আটক করে।

কয়রায় তাঁতী লীগের নেতা কোহিনুর আলম গ্রেফতার, এলাকায় স্বস্তি

কয়রায় তাঁতী লীগের নেতা কোহিনুর আলম গ্রেফতার, এলাকায় স্বস্তি

খুলনার কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের তাঁতী লীগের সভাপতি মো. কোহিনুর আলম (৪৫) পুলিশের হাতে অবশেষে গ্রেফতার হয়েছেন। সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে কয়রা থানার এসআই রাজেতের নেতৃত্বে একটি চৌকস দল কৌশলে তাকে উত্তর বেদকাশী কাছারিবাড়ি বাজার থেকে আটক করে।

অপরাধ ও মামলার বিবরণ

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, কোহিনুর আলমের বিরুদ্ধে কয়রা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে একটি মামলা রয়েছে (মামলা নং: সি.আর-৬৪৩/২৫, তারিখ ১৫/০১/২৫)। অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

রাজনৈতিক প্রভাব ও অপরাধ জগতে সম্পৃক্ততা

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তিনি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থেকে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাহারুল ইসলাম এবং কয়রা থানা বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সভাপতি ও উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ লুৎফর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় তিনি অপরাধ জগতে প্রবেশ করেন। পাশাপাশি, সাবেক এমপি রশিদুজ্জামান মোড়লের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত শেখ শাকিল আহমেদ শাহিনের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালাতেন।

অবৈধ কার্যক্রম ও অভিযোগ

স্থানীয়দের অভিযোগ, কোহিনুর আলম দীর্ঘদিন ধরে:

  • চাঁদাবাজি,

  • জমি ও ঘের দখল,

  • পানির ট্যাংকি, বয়স্ক ভাতা, রেশন কার্ড ও ৩০ কেজি চালের কার্ড প্রদানের নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ,

  • সুদের ব্যবসা,

  • বনদস্যুদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহে যুক্ত ছিলেন।

এছাড়া, তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের অভিযোগের পরও প্রভাবশালী মহলের আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ায় এতদিন তিনি আইনের আওতায় আসেননি।

গ্রেফতারের পর প্রতিক্রিয়া

কোহিনুর আলমের গ্রেফতারের খবরে এলাকায় স্বস্তির বাতাস বইছে। এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, "তার অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ ছিলাম। অবশেষে প্রশাসন তাকে গ্রেফতার করেছে। আমরা চাই, কঠোর শাস্তি হোক।"

পুলিশের বক্তব্য

কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, "গ্রেফতারকৃত কোহিনুর ইসলামের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, কোহিনুর আলমকে আদালতে হাজির করা হবে এবং পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া চলবে।

এলাকাবাসীর দাবি

এলাকাবাসী আরও দাবি জানিয়েছেন, কোহিনূরের গডফাদার শেখ লুৎফর রহমান ও তার পুত্র শাহিনকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক।

শেখ জাহাঙ্গীর কবির টুলু
বিশেষ প্রতিনিধি, খুলনা জেলা