নওগাঁয় ফুলকপি চাষে বিপাকে কৃষক: ১ টাকায় দুইটি ফুলকপি বিক্রি
নওগাঁর কৃষকরা লাভের আশায় ফুলকপি চাষ করলেও বর্তমান বাজার পরিস্থিতি তাদের হতাশার মুখে ঠেলে দিয়েছে। ফুলকপির ভালো ফলন সত্ত্বেও বাজারে দাম এতটাই কম যে উৎপাদন খরচ তো দূরে থাক, ভ্যান ভাড়াও উঠছে না।
নওগাঁয় ফুলকপি চাষে বিপাকে কৃষক: ১ টাকায় দুইটি ফুলকপি বিক্রি
নওগাঁর কৃষকরা লাভের আশায় ফুলকপি চাষ করলেও বর্তমান বাজার পরিস্থিতি তাদের হতাশার মুখে ঠেলে দিয়েছে। ফুলকপির ভালো ফলন সত্ত্বেও বাজারে দাম এতটাই কম যে উৎপাদন খরচ তো দূরে থাক, ভ্যান ভাড়াও উঠছে না।
বাজার পরিস্থিতি
বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকালে নওগাঁ সদর উপজেলার নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়কের ডাক্তারের মোড়ে দেখা যায়, ভোর থেকেই কৃষকরা ফুলকপি নিয়ে বাজারে আসেন। কিন্তু প্রতি পিস ফুলকপির পাইকারি দাম মাত্র ৫০ পয়সা থেকে ২ টাকা। অনেক কৃষক ক্রেতার অভাবে অপেক্ষা করতে বাধ্য হচ্ছেন।
কৃষকদের ক্ষোভ
কৃষক এনামুল হক বলেন,
“এক বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করতে গড়ে ৬ থেকে ৮ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু এখন বাজারে প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১ থেকে দেড় টাকায়। জমিতে থাকা কপিগুলো গরুকে খাওয়ানোর কথা ভাবছি।”
দামের ধসের কারণ
মৌসুমের শুরুতে আগাম জাতীয় এই সবজির উৎপাদন কম থাকায় দাম ছিল বেশ চড়া। কিন্তু এখন উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা দাম কমার মূল কারণ বলে কৃষকরা মনে করছেন।
জেলার উৎপাদন চিত্র
নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী:
- মোট আবাদ এলাকা: ৬০০ হেক্টর।
- সম্ভাব্য উৎপাদন: প্রায় ৬,২০০ টন।
ভোক্তাদের সুবিধা, কৃষকদের দুঃখ
ফুলকপির কম দামে ক্রেতারা স্বস্তি পেলেও কৃষকরা চরম লোকসানের মুখে পড়ছেন। উৎপাদন খরচের তুলনায় বিক্রির মূল্য এতটাই কম যে অনেকেই চাষাবাদ ছেড়ে অন্য পেশায় যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
কৃষকদের জন্য সহযোগিতার আহ্বান
কৃষকরা দাবি করছেন, সরকারের উচিত সবজির সঠিক বাজারদর নির্ধারণ এবং কৃষকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
উজ্জ্বল কুমার সরকার, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি