পাবনায় অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব, প্রশাসনের নীরবতা
পাবনার সদর উপজেলার চরতারাপুর এলাকায় পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। কোনো ধরনের সরকারি অনুমোদন ছাড়াই রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নেতৃত্বে প্রকাশ্যে চলছে এই কর্মকাণ্ড। ফসলি জমি ও পরিবেশ হুমকির মুখে থাকলেও প্রশাসন রহস্যজনকভাবে নীরব।

পাবনায় অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব, প্রশাসনের নীরবতা
পাবনার সদর উপজেলার চরতারাপুর এলাকায় পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। কোনো ধরনের সরকারি অনুমোদন ছাড়াই রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নেতৃত্বে প্রকাশ্যে চলছে এই কর্মকাণ্ড। ফসলি জমি ও পরিবেশ হুমকির মুখে থাকলেও প্রশাসন রহস্যজনকভাবে নীরব।
কীভাবে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলন?
বালু উত্তোলনের স্থান: চরতারাপুর ইউনিয়নের দিঘী গোয়াইলবাড়ি এলাকা
প্রক্রিয়া:
নদীর তীর ঘেঁষে একাধিক পয়েন্টে ভেকু (খননযন্ত্র) ব্যবহার করে উত্তোলন
প্রতিদিন অর্ধশতাধিক ট্রাক বালু নিয়ে বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ
প্রতিদিন ৫-১০ লাখ টাকার বালু বেচাকেনা
প্রশাসনের এক শ্রেণির কর্মকর্তা ও তথাকথিত কিছু মিডিয়াকর্মী জড়িত বলে অভিযোগ
স্থানীয়দের ক্ষোভ ও শঙ্কা
ফসলি জমির ক্ষতি: নদীর পাড় ঘেঁষে অবৈধ খননের ফলে শত শত বিঘা ফসলি জমি ধসে পড়ছে
জনজীবনের ঝুঁকি: কয়েক মাস আগে গর্তে পড়ে তিন শিশু মারা গেলেও উত্তোলন বন্ধ হয়নি
হুমকি ও ভয়ভীতি: জমির মালিকদের হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক বালু উত্তোলন করা হচ্ছে
কারা জড়িত?
স্থানীয়রা জানান, আগে আওয়ামী লীগ নেতারা এই বালু উত্তোলন নিয়ন্ত্রণ করতেন।
বর্তমানে স্থানীয় বিএনপি নেতা শেখ রহমত আলী ও এহসানুল হক বাবনের নাম উঠে এলেও তারা অস্বীকার করেছেন।
বাবন বলেন, ‘আমি বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত নই। প্রশাসন চাইলে এটি বন্ধ করতে পারে।’
রহমত আলী বলেন, ‘আমি কোনোভাবে জড়িত নই, তবে প্রশাসন আমার কথা শোনে না।’
প্রশাসনের ভূমিকা
পাবনা সদর থানার ওসি আব্দুস সালাম বলেন, ‘এটি এসিল্যান্ডের (ভূমি কর্মকর্তা) বিষয়। তিনি নির্দেশ দিলে আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করব।’
পাবনা সদর ভূমি সহকারী কমিশনার মুরাদ হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি জানা নেই, তবে খোঁজ নিচ্ছি।’
একটি সূত্র জানায়, প্রশাসনের এক শ্রেণির কর্মকর্তা মোটা অঙ্কের ঘুষ নিচ্ছেন।
কেন প্রশাসন নীরব?
অনিয়মের অভিযোগ: প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশ থাকার গুঞ্জন
অবৈধ ব্যবসায় রাজনৈতিক প্রভাব: ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের নেতারা জড়িত
জনস্বার্থ উপেক্ষিত: সাধারণ মানুষ ও কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা
করণীয় ও সমাধান
✔ সরকারি পর্যায়ে তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন
✔ বালু উত্তোলনকারী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে
✔ নদীর পরিবেশ ও কৃষিজমি রক্ষায় দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ জরুরি
এস এম মনিরুজ্জামান আকাশ, পাবনা জেলা প্রতিনিধি